নববর্ষ
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১০ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৭:৫৪:৪১ সকাল
নববর্ষ
বাবা!
ছবি হয়ে বসে আছো!
একা একজন!
পিছনে এসেছো ফেলে যাপিত জীবন।
দু'চোখে বিষন্ন অভিযোগে নি:শব্দ যে কথা,
আমার ও হৃদয় জুড়ে একই সেই ব্যথা।
একই এই পৃথিবীতে আছো, তবু কত দূরে;
আমার ও ইচ্ছেগুলি প্রতিদিন সূর্যের আগুনে পাখা পুড়ে
মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে!
.
বাবা!
আমি ও আমিও তোমাকে চাই! আমাকে চাও তুমি যেমন করে।
এখনো আমি তোমার হাত ধরে আছি!
শুধু জীবন, জীবিকা আর অসহ্য সময় কাছাকাছি
হতে আর দেয় না!
অথবা, এতটা পথ পার হতে হতে
কোন নি:শব্দ অভিযোগ আমার ও হৃদয়ে কোথাও জমেছে হয়ত।
তোমার অখন্ড অবসরে
তুমি কি এসে আমার হাত ধরে
কেড়ে নিতে পারতে না এই সব ব্যস্ততা থেকে!
কেন একা নি:সংগ বসে আছো দুরত্ব রেখে!
.
বাবা, মনে পড়ে?
কত যত্ন করে এক পা এক পা ফেলে চলতে শিখিয়েছিলে তোমার আংগুল ধরে ধরে..
আরো বড় হয়ে
যখন এলোমেলো জীবনের পথে হাটি
তোমাকে লুকিয়ে,
তখনো হঠাৎ - সবার আড়ালে,
আমার হাতটি ধরে মৃদু হেসে দেখিয়েছো পথ।
আজ এতদূর এসে গেছি সেই পথ ধরে।
যখন চেয়েছি যা, দিয়েছ
করেছ যা পারো,
আজ তোমার পাশটা খালি, ওখানে আমার থাকা এত যে দরকার, আর কারো
উপস্থিতিই ওই শুন্যতা পূরণ করে না জানি।
তবু আটকে আছি
যেন মাকড়সার আঠালো জালে পথহারা মৌমাছি!
এক পা বাড়াতে পারি না!
নতদৃষ্টি, স্থবির দুই পা। চেনা পথ অচেনা হয়েছে -দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি,
সংগোপনে আশা রাখি, আশা ছাড়ি না।
.
এ ইট কাঠ পাথরের নগরে
কঠিন পীচের চেয়ে কঠিন জীবন,দিনের আলোয় ও অন্ধকার!
ভোরের পাখিরা হয়ত এখনো গায় গান।
শুনিনা।
ব্যস্ত এলার্ম এর ডাকে জেগে ওঠে অভ্যস্ত কান,
অপূর্ণ বিশ্রাম শেষে অস্বস্তিতে ঘুম ভাংগে,
ছুটে চলি জীবনের এ প্রান্তে ও প্রান্তে -
আর, তারই কোন ফাঁকে মন আনচান করে ছুটি চায় নিজেরই অজান্তে।
.
বাবা!
নিজের ভুবন গড়ে নিতে
জীবনের সব ব্যস্ত দিন, সব অবসর আর সব ছুটি খরচ করেছি।
এখন পেয়েছি সব যা ছিল না
আমার জগতে,
তবু নি:সন্তান ওই আটকুড়ে রাজার মত ফিরি
হাহাকারে নিরন্তর মন-অরণ্য- পথে।
শান্তি মেলে না!
.
বাবা!
আর কিছুদিন তুমি অপেক্ষা কর।
আর ক'টা দিন!
আমিই আসবো।
এখানে এসব যত ব্যস্ততার ভান
এইসব লেনদেন সব নিষ্প্রাণ
এখানে উম নেই, উত্তপ্ত লু'!
এখানে জীবন শুষ্ক মরুর বালু..
.
কে আছে এখানে?
কে আমার পোড়া প্রাণে বয়ে যাবে জল বুকে হিম হাওয়া হয়ে?
কে বুঝবে - মানুষের মন পুড়ে ছাই হয়ে হাওয়ায় ওড়ে না, খাটি সোনা হয়।
কে আসবে পাশে?
কার পাশে খালি আছে একটু জায়গা, যা শুধু আমার?
জানি তোমারই পাশে।
সবার ভীড়েও এত দূর থেকে শান্ত বাতাসে অহর্নিশ মমতার স্পর্শ তোমার।
দূর থেকে ভালোবাসা, যন্ত্রণার কোমল উত্তাপে
ধীরে ধীরে বরফের মত গলে গলে
পলে পলে নদী হই, ধারা হয়ে বই।
পুরাতন আমি হই নতুন মানুষ,
আবার তোমার কাছে আসি।
তোমার ছুটির আগে একবার ছুটি হোক আমার।
ছেড়ে যাবো নিদারুন এ মৃত শহর!
অপেক্ষায় আছি, তুমি অপেক্ষা কর, আসুক নতুন বছর!
বিষয়: সাহিত্য
৭৪৬ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
'বাবারা হলেন জান্নাতের দরজা!' তাঁদের কে এড়িয়ে চির সাফল্যের জান্নাত প্রত্যাশা দুরাশা শুধু!
মুসলিম মানষিকতার কেউ বাবা কে অসম্মান করতে পারে না কখনই!
অনেক অনেক বছর বেচেঁ থাকুক আমাদের বাবা-এই দোয়া রবের কাছে!
যারা চলে গেছেন- আল্লাহ তাঁদের কে জান্নাতের মেহমান করে নিন!
সকল বাবারা দুইও পাড়ে ভালো থাকুন।
অনুভূতি রেখে যাবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
'বাবারা হলেন জান্নাতের দরজা!' তাঁদের কে এড়িয়ে চির সাফল্যের জান্নাত প্রত্যাশা দুরাশা শুধু!
মুসলিম মানষিকতার কেউ বাবা কে অসম্মান করতে পারে না কখনই!
অনেক অনেক বছর বেচেঁ থাকুক আমাদের বাবা-এই দোয়া রবের কাছে!
যারা চলে গেছেন- আল্লাহ তাঁদের কে জান্নাতের মেহমান করে নিন।
কাহাফ ভাইয়ের সাথে সহমত প্রকাশ করছি।
আপনার দোয়ায় আমীন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার বাবাকে নেক হায়াত দান করুন ও সবসময় সুস্থ রাখুন ভালো রাখুন। আমিন।
সুন্দর অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ভাল লেগেছে ভাইয়া ধন্যবাদ ।
আমার ছোট ভাইয়ের ফেবু আইডি থেকে তিনি জানতে পেরেছেন।
সুন্দর পরামর্শের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সুন্দর অনুভুতি রেখে গেলেন, অনেক শুভেচ্ছা রইল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন